কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার কারপাশা ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুকের(৩২) পরিবারের সাথে পূর্ব শত্রুতা ও পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে চাচা আব্দুল মাসুদ(৫৫) ও চাচী হেনা আক্তারসহ(৪৫) চাচাত ভাই মুরাদ(২৬) মিলে সবজি ক্ষেত কেটে ফলে রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২৩ জানুয়ারি(বৃহস্পতিবার) বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে ১৮ শতাংশ জমির লাউ ফলনের এ ক্ষতি সাধন করে। এ সময়ে বাড়ির বাহিরে অবস্থানকারী ওমর ফারুক ঘটনার খবর পেয়ে বাড়িতে এলে প্রতিবাদ জানাতেই তাকেও আঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। তবে বিবাদী পরিবারের দাবি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। জমি সংক্রান্ত ঝামেলা চলে এসেছে দীর্ঘদিন থেকেই। মূলত ফাঁসানোর লক্ষ্যেই পরিকল্পিত এই অভিযোগ।
অভিযোগের সাক্ষী জালালপুর ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য দুলাল মিয়ার ভাষ্য, তার কাছ থেকে ১৮ শতাংশ জমি ১৮ হাজারে পত্তন নিয়েছে ফারুকের পরিবার। ঘটনায় মোরাদের উপস্থিত না থাকলেও তার মাকে সে সাহস যুগিয়েছে এই বলে যে, গাছ কেটে ছিলেন তবে অল্প কেনো? সব কটা কেটে ফেলতেন। পুলিশের তদন্তের শেষে সব কটা কেটে ফেলে রাখতে দেখেন পরের দিন।
কারপাশা ইউনিয়নের প্যানাল চেয়ারম্যান জামাল সর্দার স্বীকার করেন তিনি মফিজ মেম্বারকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। অসংখ্য লাউসহ গাছকে কাটা অবস্থায়ও দেখতে পান। কে বা কারা কেটেছে এটা স্পষ্টকরে কেউ এ সময়ে বলতে পারেননি। তবে শুনেছেন দ্বন্দ্ব ছিল মোরাদ আর ফারুকের পরিবারের মাঝে। এ কারণে ফারুকদেরকে দায়ী করে চলেছেন মোরাদের পরিবার। কৃষকের জন্যে অনেক বড় ক্ষতি উল্লেখ করেন। ঘটনাটি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।
ওমর ফারুকের ভাষ্যমতে, জমি সংক্রান্ত ঝামেলা ছিলো দীর্ঘদিন আগে থেকেই। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে বলে স্বীকার করেন। ঘটনার একদিন আগে চরের জমির ধান ক্ষেতের রোপনকরা চারাও চাচাত ভাই তুলে ফেলে। বাধা দেওয়া এবং কথাকাটাকাটির জের ধরেই এমনটি করেছে বলে জানান। ঘটনার সময়ে তাকে আঘাতের পাশাপাশি হুমকি দেয়া হয় বলেও জানান। ফলজ গাছ কাটার ফলে তার দেড় লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
মোরাদের সাথে থানায় অভিযোগ বিষয়ে কথা হলে পারিবারিক জায়গা সংক্রান্ত ঝামেলা কথা স্বীকার করেছেন। তবে অভিযোগের ঘটনার সাথে তারা কোনমতেই জড়িত নন বলে দাবি তোলেন। কর্মস্থল ঢাকা থেকে এসেছেন মূলত ফারুকদের পরিবারের সাথে ঝগড়াঝাঁটির সমঝোতার লক্ষ্যে। জমির ধান তুলেছেন মূলত জায়গা সংক্রান্ত বিষয়টি মিমাংসা না করেই ধান রোপণের কারণে। থানায় দায়ের করা অভিযোগটি সম্পূর্ণ সাজানো বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সঠিক তদন্তে সত্যিটা বেড়িয়ে আসবে বলেও জোর দাবি জানান।
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রিয়াদ উদ্দিন গাছ কাটা প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনা স্থানে মোরাদ ছিলেন না প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তবে গাছ কাটার সময়ে তার মায়ের উপস্থিতি ছিলো বলে একাধিক স্থানীয় জানান। পাশাপাশি সাক্ষীসহ বেশ কয়েকজনেও এমনটিই উল্লেখ করেছেন বলে তিনি জানান।
নিকলী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কাজী আরিফ উদ্দিন এই বিষয়ের জবাবে অভিযোগ পরবর্তী প্রাথমিকের তদন্ত করা হয়েছে বলে জানান। এটাকে প্রসিকিউশন হিসেবে আদালতে পাঠিয়ে দেয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।