👉জনস্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর মতামত বিশেষজ্ঞদের
বিশেষ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের নিকলী, বাজিতপুর, কটিয়াদী, অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিটামইন ও কুলিয়ারচরসহ তৎসংলগ্ন হাওর অঞ্চলগুলোতেও চোখ মেলতেই দেখা যায় আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ধরণের চায়ের স্টল। এ সব চায়ের স্টলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে নিন্মমানের চায়ে সয়লাব। কোন কোন দোকানে দেখা গেছে প্লাস্টিকের ফ্লাক্সে ক্যামিকেলযুক্ত রং চা ও নিম্নমানের কপি বিক্রি করে থাকে। মাঝে মাঝে দেখা মিলে কেমিক্যালযুক্ত চা-কফি যা মানবদেহের জন্যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যা হতে পারে ক্যান্সারের কারণ। মতামত বিশেষজ্ঞদের।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে শীতের মৌসুমে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারে, রেলওয়ের ষ্টেশনে, মুদি দোকানে, ছোট খাটো চায়ের স্টলে এমনকি ভ্রাম্যমান হকারও ফ্লাক্সে করে নিন্ম মানের চা পান বিড়ি সিগারেট বিক্রি করে থাকেন। অনেক স্টল ঘুরে দেখা গেছে অনেক চায়ের স্টলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চা বিক্রি করে থাকেন। বহুল ব্যবহৃত এই সব চায়ের কাপে যথেষ্ট পরিচ্ছন্নতার ঘাটতিও দেখা গেছে।
অসংখ্য দোকানির ভাষ্যমতে, যে দোকানে আজকাল উন্নতমানের টিভি স্যাটেলাইট থাকে সেই সব দোকানে অধিক লোকজন ভিড় জমায়। গুণগত মান সাধারণ জনগণ খুঁজে না।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে মান সম্মত চা কফি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে লাভ কম হয়ে থাকে বলে অধিক পরিমাণে লাভের আশায় অনেক অসাধুরা স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর এমন নিম্নমানের চা কফিও মুখে তুলে দিচ্ছেন কাস্টমারদের কাছে। সচেতনতার অভাব থেকে অনেকে এর কুফল সম্পর্কে ধারণা নেই। যে কারণে মুখরোচক এই সব ক্ষতিকর চা খাওয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে উঠে অতি সহজে। ফলে লিভার ও কিডনিজনীত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ সব আর্টিফিশিয়াল খাবার মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর বলে মতামত ব্যক্ত করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।
এই বিষয়ে সচেতন মহলের ভাষ্য, জনস্বাস্থ্য সচেতনতায় খাদ্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকাদের উচিত গ্রাম-গঞ্জের প্রতিটি চায়ের স্টলে, দোকানে এমনকি ভ্রাম্যমান হকারদের কাছেও তাদের চায়ের গুণগত মান নির্ধারণ যাচাই-বাছাই করে দেখা উচিত। এই বিষয়ে তদারকির ঘাটতির কথা ও তুলে ধরেছেন অনেকে। হাওর অঞ্চলের এই বাস্তবতাকে অনেকে আবার গোটা বাংলাদেশের একটি খণ্ডচিত্র বলেও উল্লেখ করেছেন।
এই বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা গেছে কিশোরগঞ্জ জেলার সর্ববৃহৎ আঠার বাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের বুধবারের সাপ্তাহিক গরুর হাটে কোমলমতি শিশু ও কিশোরেরা হকার সেজে অতিরিক্ত লাভের আশায় নিয়মিত নিম্নমানের চা বিক্রি করে চলেছেন। অল্প পুঁজিতে লাভজনক এই ব্যবসা করা যায় বলে এই সব ব্যবসায়ীর পরিমাণও বেশি হয়ে থাকে।
নিকলী উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক আব্দুল বাতেন চৌধুরীকে হাওর অঞ্চলে নিম্নমানের চায়ে সয়লাব। গুণগত মান সম্পর্কে যাচাই-বাছাই বিষয়টি তার তদারকির দায়িত্বে কি না? এমন জবাবে তিনি কোন অভিযোগ পাননি বলে উল্লেখ করেন। অভিযোগ পেলে যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন কি না এমন জবাবেসু নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান। তবে তিনি নিজে চা খাননি বলেও উল্লেখ করেন। তাই গুনগত মান বিষয়ে তিনি অবহিত নন।
কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ সাইফুল ইসলামের দেয়া তথ্যমতে, কেমিক্যালযুক্ত চা-কফিসহ আর্টিফিসিয়াল (কৃত্রিম ) যে কোন ধরণের কেমিক্যাল যুক্ত খাবার মানবদেহের জন্যে ক্ষতিকর। সে ক্ষেত্রে দীঘ মেয়াদী যদি কেহ নিম্নমানের কেমিক্যালযুক্ত চা-কফি সেবন করে তাহলে হতে পারে লিভার সিরোসিস, কিডনি ড্যামেজ। এমনকি দীর্ঘ মেয়াদি চালিয়ে গেলে হতে পারে ক্যান্সার।
এছাড়াও এই বিষয়ে বেশ কিছু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে কথা হলে এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের সকলের প্রায় সমপর্যায়ের অভিমত এই সব খাবার সাময়িক মুখরোচক হলেও মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই খাবার বর্জনে জনসচেতনতার পাশাপাশি এ থেকে মুক্তির অন্যতম উপায় প্রসাশনের আইনি হস্তক্ষেপ।
আপনার মতামত লিখুন :